আমার এই রোগী এসেছিলেন একটি স্বপ্ন নিয়ে – মা হওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু প্রথম দেখাতেই যখন তাকে জানালাম তার জরায়ুতে একটি বিশাল টিউমার রয়েছে, যা প্রায় ৮ মাসের গর্ভস্থ শিশুর আকারের, তিনি যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। ধীরে ধীরে মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করলেন ও laparoscopic myomectomy বা microsurgery করার সিদ্ধান্ত নিলেন। এত বড় টিউমার laparoscopic পদ্ধতিতে অপারেশন করা আমার পেশাগত জীবনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। সার্জারির সময় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়, blood transfusion দিতে হয়, এবং কিছুদিন ICU তেও থাকতে হয় তাঁকে। অবশেষে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।
অপারেশনের ৬ মাস পরে তাকে প্রেগন্যান্সির জন্য চেষ্টা করতে বলি, কিন্তু তখন আরেকটি বাধা সামনে আসে – pelvic endometriosis বা তথাকথিত ‘chocolate cyst’। ন্যাচারালি কনসিভ না হওয়ায় IVF পরামর্শ দিই। প্রথমবার embryo transfer ব্যর্থ হয়, এবং তিনি মানসিকভাবে কিছুটা ভেঙে পড়েন। কিন্তু হাল ছাড়েননি – আবার উঠে দাঁড়ান। এইবার একটু অন্যরকম পথ বেছে নিই – Modified Natural Cycle Embryo Transfer করি।
আজ তার pregnancy রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে – সেই মুহূর্তের আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। চিকিৎসা বিজ্ঞান, ধৈর্য আর আশার এক অসাধারণ মিলন ঘটল এই যাত্রায়। একজন ডাক্তার হিসেবে, এটা শুধু একটা প্রফেশনাল সাফল্য নয়, এটা একটি নারীর মা হওয়ার পথে স্বপ্ন পূরণের সাক্ষী থাকা – এক গভীর মানসিক তৃপ্তি।